স্বামীকে নিয়ে ভালোবাসার উক্তি

স্বামীকে নিয়ে ভালোবাসার উক্তি

মানব জাতি সৃষ্টিকর্তার এক অনন্য সৃষ্টি। স্বামীকে নিয়ে ভালোবাসার উক্তি আত্মাকে পরিশুদ্ধ করতে সক্ষম। খারাপ কাজ থেকে নিজেকে দূরে ঠেলে দিয়ে ভালো কাজ ও আচরণের মাধ্যমে মানুষ নিজের অবস্থান এমন উচ্চ স্তরে নিতে সক্ষম, যা স্বয়ং ফেরেশতারাও অর্জন করতে পারেনি। সৃষ্টিকর্তার এমনই এক অনন্য সৃষ্টি মানুষ জাতি। নবিদের দেখানো পথ ও দ্বীনের সঠিক অনুকরণে সে এই দুনিয়া ও আখিরাতে নিজের সুখ নিশ্চিত করে পরকালে চির শান্তি অর্জন করতে সক্ষম। সুতরাং! এমন অবস্থান নিশ্চিত করার লক্ষ্যে দ্বীনের আধ্যাত্মিক ও বাহ্যিক কল্যাণের বিষয়গুলো অন্তত সবার অনুসন্ধান করা উচিত।

স্বামীকে নিয়ে ভালোবাসার উক্তি

বলাবাহুল্য ধর্মীয় মূল্যবোধে অটল থাকা একজন ব্যক্তির ক্ষেত্রে খারাপ কাজ থেকে বিরত থাকা কিংবা তার পাপী আত্মা পরিশুদ্ধ করার একটি মাধ্যম হলো বিয়ে। এটি সর্বশক্তিমান মহান আল্লাহর নৈকট্য অর্জনেরও একটি মাধ্যম বলা যায়। এক্ষেত্রে একজন ভালো জীবন সঙ্গী বরাবরই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। যখন দুজন আল্লাহভীরু ব্যক্তি বিয়ের মাধ্যমে একটি পরিবার তৈরী করে, দুজনই গুনাহ থেকে বেঁচে থাকার উদ্দেশ্যে এক হয় এবং দুজনই হয় একই চিন্তা-ধারার অধিকারী, সেক্ষেত্রে তাদের মধ্যে শারীরিক পরিতৃপ্তির পাশাপাশি মানসিক প্রশান্তিও আসে; যা পারস্পরিক ভালোবাসা ও ভালোলাগা আরও বাড়িয়ে দেয়। এমন দম্পতি যৌন বিকৃতির মতো বিপজ্জনক আসক্তি থেকে সবসময় মুক্ত থাকে।

 

একজন দ্বীনি জীবন সঙ্গী আপনাকে সব সময় সৎ কাজে আহবান করবে, ঠিক যেমনভাবে অসৎ ব্যক্তি খারাপ কাজে আহ্বান করে, যতক্ষণ পর্যন্ত তার প্ররোচণায় আমরা খারাপ কাজে না জড়িয়ে পড়ি। তাই বিয়ের ক্ষেত্রে ইসলামে গুরুত্বপূর্ণ একটি শর্ত হলো জীবন সঙ্গীর আচরণ ও দ্বীনের প্রতি মূল্যবোধের দিকটা খেয়াল রাখা । এবং “স্বামীকে নিয়ে ভালোবাসার উক্তি” আর্টিকেলের মাধ্যমে বোঝানোর চেষ্টা করব। 

 

স্বামীর সাথে জীবনযাপন

 

একজন নারী তার সংসারকে একটি স্বর্গে পরিণত করতে পারে, আবার সে চাইলে তা জ্বলন্ত নরকও হতে পারে। সে তার স্বামীকে সাফল্যের শীর্ষে কিংবা দুর্ভাগ্যের চরম প্রান্তে ছুড়ে ফেলতে পারে। স্বামীর সংসার সামলানো ইসলামের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। একে জিহাদ (আল্লাহর পথে পবিত্র যুদ্ধ) এর সমপর্যায়ে নেয়া হয়েছে। আরও বিস্তৃতভাবে বলতে গেলে; জিহাদ বলতে মূলত ইসলামের অগ্রগতি, রক্ষা ও সম্মানের জন্য সংগ্রামকে বোঝানো হয়; একে পবিত্র যুদ্ধও বলা যায়। এটি আল্লাহর নিকট সর্বোচ্চ ইবাদতগুলোর একটি। আর স্বামীর খেদমত, তাকে সঠিক পথে আনা খুব একটা সহজ কাজ নয়। তাই স্ত্রীর এমন কাজগুলোকে ইসলামে জিহাদের মর্যাদা দেয়া হয়। একবার নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এক নারীকে জিজ্ঞেস করলেন-

অর্থ: “তুমি তোমার স্বামীর সাথে কেমন আচরণ কর?” তিনি বললেন, ‘নিজের সাধ্যের মধ্যে আমি তার সেবা-যত্নে বিন্দু মাত্রও ত্রুটি করি না।’ নবিজী বললেন- “সাবধান থেকো! তার সেবাই তোমাকে জান্নাতে পৌঁছাবে বা জাহান্নামে”।”

 

নবি হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরো বলেছেন-

অর্থ: “যে নারী তার স্বামীকে সন্তুষ্ট রেখে মৃত্যু বরণ করল, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। “১২ নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরও বলেন- “যে নারী স্বামীর মুখাপেক্ষী হওয়া সত্ত্বেও তার কৃতজ্ঞতা আদায় করে না, আল্লাহ তাআলা তার দিকে ফিরেও তাকান না।

 

সহানুভূতি

 

দু’জনের প্রতি দু’জন যদি সমান আবেগী হয়, তবে সম্পর্কের ভিত্তি আরও মজবুত হয়। এক্ষেত্রে ডিভোর্সের আশংকাও কমে যায়। তবে গর্বের সাথে কখনো এমনটা ভেবো না যে- তোমার স্বামী প্রথম দেখাতেই তোমার প্রেমে পড়েছিল বলে সে আর কখনোই বদলাবে না। যে প্রেম শুধু রূপের সৌন্দর্য দেখে হয়, তা কখনো স্থায়ী হয় না। চিরস্থায়ী প্রেম হলো খুব ঘনিষ্ঠ বন্ধুর মতো। ভালোবাসা দিয়ে কোনো পুরুষকে আপন করে নিলে, সেও স্ত্রীর জন্য নিজের সবকিছু বিলিয়ে তাকে রক্ষা করতে প্রস্তুত থাকে। স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক বন্ধুত্বপূর্ণ হলে সেই সম্পর্কের ভিত্তি মজবুত থাকে। 

 

স্বামীর মর্যাদা

 

ভাগ্যবান তো সে মহিলা; যে তার স্বামীকে সম্মান করে এবং কোনো প্রকার হয়রানি করে না। স্বামীর খাবার শেষে তার হাত ধোয়ার পানি এবং তোয়ালের ব্যবস্থা করা স্ত্রীর দায়িত্ব।

স্বামীকে নিয়ে ভালোবাসার উক্তি

স্ত্রী হিসেবে স্বামীর প্রতি খুব মনযোগী হওয়া উচিত। অকারণে তাকে অপদস্ত করা ঠিক নয়। কেননা স্ত্রী স্বামীকে অপদস্ত করলে, পরিণামে স্বামীও স্ত্রীকে অপদস্ত করবে, এটাই স্বাভাবিক। তখনই সম্মান ও বিশ্বাসের জায়গায় ফাটল ধরা শুরু করে। এভাবে তুচ্ছ বিষয়ে কথা কাটাকাটি ধীরে ধীরে সম্পর্কের অবসান ঘটায়। এক সাথে একই ছাদের নিচে থেকেও শান্তি পাওয়া যায় না। একরাশ হতাশায় জীবন জর্জরিত হয়ে পড়ে। এক সময় এসব মানসিক অশান্তি এতটাই প্রকট হয়ে ওঠে, যা আমরা আর সহ্য করতে পারি না।

৭০ বছর বয়স্ক এক বৃদ্ধ তার স্ত্রীকে হত্যা করে । তিনি বলেন- ‘হঠাৎ আমার প্রতি তার আচরণ পাল্টে যায়। আমাকে সহ্যই করতে পারত না। সব সময় আমাকে গালিগালাজ করত। একদিন বলল আমি তার সাথে সংসার করার যোগ্য না। তখন বুঝতে পারলাম, তার মনে আমার জন্য কোনো জায়গা নেই। সত্যি বলতে কি, জীবনের এই পর্যায়ে এমন কথা শোনার জন্য প্রস্তুত ছিলাম না। আমাকে হতাশা আর ক্ষোভ ঘিরে ফেলে, কিছু না ভেবেই তাকে খুন করে ফেলি। পাশের ঘরে কুড়াল ছিল। ওটা দিয়ে খুন করি।

 

অভিসন্ধি এবং নিষ্পত্তি

 

সারা দিনের পরিশ্রমে স্বামী খুব ক্লান্ত ও নার্ভাস থাকলেও অনেক বোকা ও স্বার্থপর নারীরা তা বুঝতে পারে না। স্বামীর প্রফুল্লতা ফিরে আসার অপেক্ষা না করেই তারা অভিযোগের অস্ত্র দিয়ে তাকে আঘাত করতে শুরু করে। 

 বলতে থাকে-“আমি আজ ভুল করে চাকু দিয়ে আমার আঙ্গুল কেটে ফেলেছি। গতকাল শহিদুলের বিয়েতে যাওয়ার মোটেও ইচ্ছে ছিলো না  আমার। আপনি কি সেদিন অমুকের স্ত্রীকে খেয়াল করেছেন? কী সাজ তার! আমার সেই সৌভাগ্য কোথায়! প্রকৃত স্বামী তো সে; যে তার স্ত্রীকে পছন্দ করে এবং সুন্দর সুন্দর জিনিস কিনে দেয়, শপিং এ নিয়ে যায়। অমুক খুবই ভাগ্যবতী: যে তার স্বামী তাকে খুব ভালোবাসে, তিনি আপনার মতো নন। আপনার বাচ্চাদের সেবা করে আমি এই আবদ্ধ ঘরে আর এক মুহূর্তও থাকতে পারছি না। আপনার যা খুশি করুন।”

 এসব নারী মনে করে তাদের স্বামী প্রতিদিন সকালে যেন পিকনিক বা আনন্দযাত্রায় বের হয়, অফিসে নয়। অথচ একজন পুরুষ প্রতিদিন কত যে সমস্যার সম্মুখীন হোন!

প্রিয় বোন! অসময়ে অভিযোগ করার এই অভ্যাস আল্লাহর জন্য বাদ দিন। উপযুক্ত সময় খুঁজে বের করুন। অতঃপর অভিযোগ না করে আসল সমস্যাগুলো উপস্থাপন করুন। এতে আপনার প্রতি স্বামীর বৈরী মনোভাব তৈরির সুযোগ থাকবে না এবং পারিবারিক বন্ধন সুরক্ষিত থাকবে। ইনশাআল্লাহ

 

আস্থাভাজন ও স্বস্তিপূর্ণ মনোভাব

 

আপনি যদি উন্নত জীবন ও স্বামীর সাথে সুসম্পর্কের আশা করেন, তবে অবহেলা করবেন না। ইতিবাচক মনোভাব ও মনোরম স্বভাব ধারণ করুন। দুজনের সামঞ্জস্যপূর্ণ ব্যবহার সম্পর্ক সুরক্ষার হাতিয়ার। সম্পর্ক বিচ্ছেদের কারণ দুজনের অসামঞ্জস্যপূর্ণ আচরণ। পারিবারিক সমস্যা ও মতবিরোধের মূল উৎস, দম্পতির মাঝে মনোভাব, মূল্যবোধ ও আচরণের অসামঞ্জস্যতা। বিবাহবিচ্ছেদের পরিসংখ্যানগুলো থেকে বিষয়টি স্পষ্ট। একজন মহিলা আদালতে অভিযোগ করেছিলেন, তার স্বামী সব সময় দুপুর ও রাতের খাবার বাইরে খেতে যান। স্বামী তখন বাইরে খেতে যাওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করেছিলেন যে- ‘তার স্ত্রী মোটেও স্বাভাবিক নয়, সে চরম পর্যায়ের মস্তিস্ক বিকৃত।’ এই কথা শুনে স্ত্রী তাৎক্ষণিক ছুটে গিয়ে বিচারকের সামনেই স্বামীকে মারতে শুরু করে।

 

এই নির্বোধ মহিলা ভেবেছিলো- অভিযোগ, গালিগালাজ আর মারধর করার মাধ্যমে সে স্বামীকে ঘরে ফিরিয়ে আনতে পারবে। তাই সে সহজ ও বুদ্ধিদ্বীপ্ত কোনো পদ্ধতি অবলম্বন করেনি। অথচ সেটাই হতো সঠিক পদক্ষেপ। তারা দু’জনেই উপযুক্ত আচরণ করতে ভুল করেছে।

 

তাই হাদিসে আছে- ‘মহানবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে একজন মহিলার বিষয়ে অবহিত করা হয়েছিল, যে অধিক নামায, রোযা ও সদকার কারণে প্রসিদ্ধ ছিলো। তবে সে তার রুক্ষ আচরণ দিয়ে সঙ্গীদেরকে কষ্ট দিতো। মহানবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন-

 

অর্থ: “সে জাহান্নামের বাসিন্দা।

 

 প্রশংসা  করুন

 

যদি কোনো ব্যক্তি তার কষ্টার্জিত সম্পদ আল্লাহকে খুশি রাখার উদ্দেশ্যে দান-সদকা করে বদান্য ও উদার হয়, আর সে তার এমন কাজের জন্য প্রশংসা পায় এবং তার কাজের মূল্যায়ন করা হয়; তবে তা ঐ ব্যক্তির মাঝে উষ্ণ অনুভূতি যোগায় এবং সে একটি অভীষ্টপূরণের আনন্দ পায়। ভালো কাজ করা তখন তার স্বভাবে পরিণত হয়। নিজের সম্পদ অভাবীকে বিলিয়ে দেওয়া তার অভ্যাস হয়ে যায়। অপরদিকে যদি তার ভালো কাজের মূল্যায়ন করা না হয়, প্রশংসা না করা হয়, তাহলে সে ভালো কাজ করার উৎসাহ-উদ্দীপনা হারিয়ে ফেলতে পারে। স্বভাবিকভাবেই যখন তার ভালো কাজের প্রশংসা করা হবে না, তখন সে তার কষ্টার্জিত সম্পদ খরচ করার উৎসাহ পাবে না। কৃতজ্ঞ থাকা, অপরের তারিফ করতে পারা এগুলো একজন ব্যক্তির প্রশংসনীয় গুণ। আর এটিই সেই গোপন রহস্য যার মাধ্যমে সে দান করার প্রতি উদ্বুদ্ধ হতে পারে। মহান আল্লাহ তাআলা বলেছেন যে- মানবজাতির উপর তাঁর অনুগ্রহ ও রহমত বর্ষিত হওয়ার জন্য শর্ত হলো তাঁর নেয়ামতের শুকরিয়া আদায় করা।

হে বোন!

 

মনে রাখবে! তোমার স্বামীও একজন মানুষ। সবার মতো তারও প্রশংসা শুনতে ভালো লাগে। সে তার পরিবারকে ভরণপোষণ দিতে প্রস্তুত থাকে এবং সে এটাকে তার নৈতিক ও আইনি বাধ্যবাধকতা মনে করে। তবে যখন তার এই দায়িত্ব পালনের জন্য তাকে ধন্যবাদ দেওয়া হয় আর তার প্রশংসা করা হয়, তখন তার কাছে এই দায়িত্ব পালন বোঝা মনে হয় না। যখনই সে ঘরের কোনো সরঞ্জাম অথবা তোমার জন্য বা বাচ্চাদের জন্য কাপড়চোপড় বা জুতা অথবা এরকম কিছু নিয়ে আসে, তখন তুমি খুশি হও এবং তাকে ধন্যবাদ জানাও। তার ছোট-বড় যে কোনো কাজ- যেমন, ঘরের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কেনা, পরিবারকে নিয়ে ঘুরতে যাওয়া অথবা তোমাকে টাকাপয়সা দেওয়া ইত্যাদি- যা কিছু সে করে থাকে, সব ক্ষেত্রে তাকে কৃতজ্ঞতা জানাও। তুমি যদি তোমার স্বামীর প্রশংসা কর, তাহলে সে কষ্ট করলেও তার ভালো লাগবে।

 

 

তার খুঁত ধরতে যাবেন না

 

নিজের স্বামীকে নিখুঁত মনে করে এমন কোনো মহিলা বাস্তবে খুঁজে পাওয়া যায় না। কেউ তার স্বামীর দোষত্রুটি অন্বেষণ করলে নিঃসন্দেহে কোনো না কোনো দোষ খুঁজে পাবেই। অনেক মহিলা আছে- যারা স্বামীর মাঝে সামান্য একটি দোষ পেলেই সে ব্যাপারে এত অতিরঞ্জন করে, যা অসহ্য বাধা হয়ে দাঁড়ায়। এই দোষ তখন স্বামীর সকল যোগ্যতাকে ছাপিয়ে যায়। এসব মহিলা সবসময় অন্য পুরুষের সাথে তাদের স্বামীর তুলনা করে। তারা কল্পনায় এমন এক আদর্শ পুরুষ তৈরি করে রেখেছে, যার গুণাগুণ তাদের স্বামীর সাথে মিলে না।

 

এভাবে বিয়ে করে কী পেলো আর কী পেলোনা সেটা নিয়ে শুধুই অভিযোগ করে যায়। এরা এক সময় নিজেদেরকে দুর্ভাগা আর ব্যর্থ ভাবতে থাকে, যা তাদেরকে ধীরে ধীরে হিংসুক ও রাগী বানিয়ে দেয়। একজন নারীর এহেন আচরণ তার স্বামীর উপর কী প্রভাব ফেলে? হয়ত তার স্বামী খুবই ধৈর্যশীল, সে তার সমস্ত রাগ ও দুর্ব্যবহার সহ্য করে নেয়। কিন্তু মনে মনে সে অপমান বোধ করে। স্ত্রীর প্রতি বিরক্ত হয়ে ওঠে। ফলে তারা তর্কে জড়িয়ে পড়ে। পরষ্পরের দোষ-ত্রুটি বড় করে দেখা শুরু করে। একে অপরের ঘৃণার পাত্রে পরিণত হয় এবং তাদের জীবন রেশারেশিতে পূর্ণ হয়ে ওঠে। অতঃপর হয়তো কষ্ট করে একসাথে জীবনযাপন করে নয়তো তালাকের পথ বেছে নেয়। উভয় ক্ষেত্রেই তাদের দুজনেরই ক্ষতি। দ্বিতীয় বিয়ের পর যে পরিস্থিতি ভিন্ন হবে সেটাও নিশ্চিত করে বলা যায় না। অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় যে- কিছু নারী একেবারেই বিবেকহীন আর তাদের মূর্খতার উপর একগুঁয়ে। এরা তুচ্ছ বিষয় নিয়েও পারিবারকে ছিন্নভিন্ন করে দিতে পারে।

 

স্বামীর সঙ্গেই সুখে জীবন যাপন করুন

 

হে বোন! তোমার স্বামী ছাড়া অন্য কারও দিকে নজর দিও না। বিয়ের আগে হয়তো তোমার আরও অনেক প্রস্তাব ছিল। হয়তো ঐ প্রস্তাবগুলো ছিলো সুন্দর, শিক্ষিত, সম্পদশালী ছেলেদের পক্ষ থেকে, যাদেরকে তুমি বিয়ে করতে চেয়েছিলে। বিয়ের আগে এরকম আশা করা, স্বপ্ন দেখা স্বাভাবিক ছিল। তবে এখন তুমি তোমার জীবন সঙ্গী বেছে নিয়েছো এবং তার সাথে সারা জীবন একত্রে থাকার জন্য একটি পবিত্র চুক্তি স্বাক্ষর করেছো। তাই এখন অতীতের সবকিছু ভুলে যাও। অবশ্যই এখন তোমার উচিৎ অতীতের সব ইচ্ছা, আকাঙক্ষা ও বিয়ের সেই সব প্রস্তাব ভুলে যাওয়া।

 

যে তার চোখকে স্বাধীন ছেড়ে দেয়, সে সর্বদা কষ্টে থাকে আর স্থায়ীভাবে হিংসা-বিদ্বেষের মধ্যে আটকা পড়ে; এটাই স্বাভাবিক। অন্য পুরুষদের দিকে তাকিয়ে এবং তোমার স্বামীকে তাদের সাথে তুলনা করে তুমি হয়তো এমন এক ব্যক্তির সন্ধান পাবে যার মাঝে তোমার স্বামীর দোষগুলো নেই। তুমি তখন ভাবতে পারো ঐ ব্যক্তি নিখুঁত। কারণ তার দোষত্রুটি কোথায় তুমি তা জানো না। তারপর তুমি নিজের বিয়েকে একটি ব্যর্থতা হিসেবে ধরে নিতে পারো; যা তোমাকে ধংসাত্মক পরিণতির দিকে ঠেলে দেবে।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *