স্বামীকে নিয়ে ভালোবাসার স্ট্যাটাস

স্বামীকে নিয়ে ভালোবাসার স্ট্যাটাস

 

স্বামীকে নিয়ে ভালোবাসার স্ট্যাটাস খুঁজছেন  । তাহলে পড়ুন,আল্লাহ তাআলা নারী-পরুষ নামক দুটি ভিন্ন রূপে সৃষ্টি করেছেন। তারা উভয়ে মিলে একটি পরিবার গঠন করবে । এবং তার থেকে একটি সভ্যতার বুনিয়াদ প্রতিষ্ঠিত হবে। পৃথিবীর সকল ধর্ম-বর্ণেই বিয়ে প্রথার প্রচলন আছে। তবে এর আনুষ্ঠানিকতা ও বাস্তবায়ন একেক ধর্মে একেক আঙ্গিকে । 

প্রায় সকল ধর্মেই এর গুরুত্ব সীমাহীন। ইসলাম তো একে ইবাদত হিসাবেই স্বীকৃতি দিয়েছে। সঠিক সময়ে বিয়ে করার বেশ কিছু ভালো দিক রয়েছে। যেমন-

স্বামীকে নিয়ে ভালোবাসার স্ট্যাটাস

১. এক সময় সে জীবনের বাস্তবতায় হারিয়ে যায়। অপরদিকে পরিবার একটি আশ্রয়স্বরূপ; যা তাকে হারিয়ে যেতে দেয় না। বিবাহিত ব্যক্তি তার জীবনের সব সুখ-দুঃখ সহজেই সঙ্গীর সাথে ভাগ করে নেয়ার সুযোগ পায়।

২. । সঠিক সময়ে বিয়ে না করা ব্যক্তি সবসময় এক ধরনের শারীরিক ও মানসিক অশান্তিতে ভোগে। এসব শারিরীক ও মানসিক সমস্যার দরুন এক সময় প্রচণ্ড হতাশ হয়ে ওঠে। কোনো কাজে মনযোগী হতে পারে না। 

স্বামীর সাথে বসবাস

ধরুন আপনি একটি চাকরি করবেন বলে ঠিক করেছেন । এখন সেই চাকরি পেতে হলে আপনার অবশ্যই যোগ্যতার প্রয়োজন হবে। সাথে ন্যূনতম দক্ষতাও দরকার। ঠিক এমনি করে একজন আদর্শ স্ত্রী হিসেবে স্বামীর মন জয় করার জন্যও যোগ্যতার প্রয়োজন। 

 আর তা মোটেও সার্টিফিকেটের যোগ্যতা নয়। এক্ষেত্রে একজন আদর্শ স্ত্রীই পারে তার স্বামীকে খারাপ কাজ থেকে দূরে সরিয়ে ভালো কাজের উৎসাহ দিতে, তার স্বাস্থের প্রতি খেয়াল রাখতে।  

সহৃদয়তা

আমরা সাধারণত এমন জীবন সঙ্গী পাবার আশা করি; যে আমাদের অনেক বেশি ভালোবাসবে। কেননা- স্বামী স্ত্রীর মধ্যে ভালোবাসা না থাকলে পরিবারে নিজেকে খুব একা মনে হয়। নারীরা অত্যন্ত আকর্ষণীয়, কোমল আর মায়াময়। প্রকৃতিগতভাবেই সকলে তাদের প্রতি আকৃষ্ট হয়। 

শোনো বোন! তোমার স্বামীও এর ব্যতিক্রম নয় । সেও কোমলতায়, মায়ায় আকৃষ্ট হয় । তারও ভালোবাসার প্রয়োজন । বিয়ের আগে বাবা-মা তাকে যেমনটা নিঃস্বার্থভাবে ভালোবেসেছিল।  সে এখন তার স্ত্রীর কাছেই তা আশা করে। অন্য সবার মতো সেও একটু বন্ধুত্ব আর ভালোবাসা পাওয়ার আকাঙক্ষায় থাকে।

স্বামীর সম্মান

কাজ শেষে সে ঘরে ফিরলে তাকে সুন্দর কিছু বলে প্রতিদিন স্বাগত জানানো যায়। এসব ছোট ছোট কাজ সংসারে বেশ ইতিবাচক প্রভাব ফেলে।

স্বামীকে নিয়ে ভালোবাসার স্ট্যাটাস

স্বামীকে নিয়ে ভালোবাসার স্ট্যাটাস  নামক আর্টিকেলটি পড়ে আপনার চেতনা কে পরিবর্তন করে ফেলুন

অভিযোগ এবং সমাধান

জীবনে সমস্যা ও অভিযোগ নেই এমন কাউকে খুঁজে পাওয়া মুশকিল । প্রত্যেকেই তার সমস্যাগুলো কাছের মানুষকে বলতে ভালোবাসে। তবে খেয়াল রাখতে হবে । প্রত্যেক কাজের সুনির্ধারিত সময় ও উপযুক্ত জায়গা আছে। তাই অভিযোগ করার উপযুক্ত সময় এবং পরিস্থিতি খুঁজে নেওয়া উচিত ।

প্রিয় বোন! আপনার স্বামী কাজের সময় কত অদ্ভুত আর অসভ্য লোকের মুখোমুখি হয়ে সারাদিন অফিসে ব্যস্ত থাকেন।  আপনি তা জানেন কী! তাই বাড়িতে ফিরে সে ভীষণ ক্লান্ত থাকে। তার সামনে তখন একসাথে সমস্ত অভিযোগ উপস্থাপন করা উচিত নয়। তিনি একজন মানুষ হিসেবে নিজেকে দোষী মনে করবেন। বুঝতে শিখুন, তার প্রতি বিনীত হোন

ভেবে দেখুন! কত জঘন্য! এমন স্বামীরা আত্মবিশ্বাস হারিয়ে ফেলে, জীবনকে অর্থহীন ভাবতে থাকে। আর এই মনোভাব মস্তিষ্ক থেকে সাধারণত মোছা যায় না। ফলে এমন ব্যক্তিরা বন্ধুবান্ধবের সাথে খুব কম মিশে, মানুষের সাথে কথাবার্তা কম বলে, আর তখন বিভিন্ন মানসিক সমস্যার সৃষ্টি হয়। এই উদ্বেগ ও শূন্যতার বিরূপ প্রভাব জীবনের সকল ক্ষেত্রে বিস্তার লাভ করে। এমন ব্যক্তিরা জীবনের খেই হারিয়ে ফেলে, সব সময় মানসিক যন্ত্রণায় ভুগতে থাকে।

বিশ্বস্ত ও প্রশান্ত মনোভাব

সকল সম্পর্কে বিশেষত সব দম্পতির মাঝে বিশ্বস্ত ও প্রশান্ত মনোভাব অপরিহার্য । দাম্পত্য জীবন সম্মিলিত জীবন, তাই প্রফুল্ল মন নিয়ে একসাথে থাকুন, একসাথে বাঁচুন।

আপনি জানেন না- ঘরে সুখ আনার ক্ষমতা রয়েছে আপনার; মমতার অগ্রদূত হয়ে স্বামী ও সন্তানকে প্রশান্তিতে আচ্ছন্ন করার যোগ্যতা আছে আপনার; উদার মনোভাব আর সুন্দর আচরণ দিয়ে তাদের মন জয় করে নেওয়ার স্বামর্থ্য আছে আপনার!

এক মহিলা অভিযোগ করেন- তার স্বামী পনেরো মাস ধরে তার সাথে কথা বলেন না। অথচ নিজের মায়ের সাথে তার আচরণ ভালো। জবাবে স্বামী বলেন- স্ত্রীর দুর্ব্যবহারের কারণে তিনি পনেরো মাস ধরে তার সাথে কথা না বলার এই সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছেন।

স্বামীকে নিয়ে ভালোবাসার স্ট্যাটাস

বেশিরভাগ পারিবারিক কলহের সমাধান উদারতা, মমত্ববোধ এবং কোমল স্বভাবের মাধ্যমে করা সম্ভব। যদি আপনার স্বামী অপরাধ করে, আপনাকে অবহেলা করে, সম্পদ অপচয় করে । অথবা পরস্পরের মাঝে বিচ্ছেদ ঘটার মতো যে কোনো সমস্যার সৃষ্টি করে । তবে তা সমাধানের একমাত্র উপায় হলো- পরস্পর উদার হওয়া এবং বিনম্র স্বভাব অবলম্বন করা ।

এমন আচরণ অনুশীলনের ফলাফলগুলো অলৌকিক ঘটনার মতো হয়ে থাকে। যে মহিলা স্বামীকে কষ্ট দেয়, সে আল্লাহর অনুগ্রহ থেকে দূরে থাকে। এবং যে তার স্বামীকে সম্মান করে, স্বামীর আনুগত্য করে এবং তাকে কোনো দুঃখ দেয় না, সে ধন্য এবং সমৃদ্ধ হয়।

ভুল প্রত্যাশা

প্রিয় বোন! আপনি বাড়ীর নেত্রী। বুদ্ধিমতি এবং বোধ্যা হোন । আপনার ব্যয়ের হিসাব রাখুন । আয়ের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ ব্যয়ের বাজেট করুন। কারো সাথে প্রতিযোগিতা করবেন না, হিংসা করবেন না । কোনো মহিলার সুন্দর পোষাক বা কারো বাড়ীতে চমৎকার কোনো বস্তু দেখে পছন্দ হলে, স্বামীর স্বামর্থের প্রতি খেয়াল রেখে আবদার করুন।

তাকে ঋণ নিতে বাধ্য করবেন না। চাহিদা পূরণের জন্য আয় বৃদ্ধির অপেক্ষা করা ।হিংসাত্বক প্রতিযোগিতায় লিপ্ত বেশির ভাগ লোভী ও স্বার্থপর নারী এসব বুঝতে চায় না । ফলে তারা স্বামীর চোখে ঘৃণার পাত্রীতে পরিণত হয়। তাদের দাবি মেটাতে গিয়ে স্বামীরা ক্লান্ত ও বিতৃষ্ণ হয়ে ওঠে ।

পরিশেষে এর একমাত্র সমাধান হয় বিবাহ বিচ্ছেদ, অথবা রক্তপাত । তারা চায় এমন স্বামী, যে দাসের মতো তাদের সেবা করবে এবং তাদের ব্যয়ে কোনোও আপত্তি করবে না । এসব মহিলারা নারী জাতের কলঙ্ক। এই উচ্চাভিলাষ তাদের বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটায়। ফলে তারা সন্তানের ভালোবাসা থেকে বঞ্চিত হয়। একাকিত্ব ঘিরে ধরে তাদেরকে। নতুন স্বামী তাদের কপালে জোটে না। জুটলেও, পরের স্বামীও তাদের চাহিদা পূরণে ব্যর্থ হয়।

প্রিয় বোন! লোভী না হয়ে অল্পে তুষ্ট হোন। অন্যের অনুকরণ ছেড়ে নিজের পরিবারের সমৃদ্ধি ও স্বামীর সন্তুষ্টি অর্জনের চেষ্টা করুন।

আরেক বর্ণনায় হযরত নবি করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন-

অর্থ: “তাকওয়ার পরে মুমিন বান্দার সর্বশ্রেষ্ঠ অর্জন হলো, নেককার স্ত্রী। যে স্বামীর আদেশ অমান্য করে না, এবং স্বামীর অনুপস্থিতিতে তার সম্পদ ও নিজের সতীত্বের হেফাজত করে

তার দোষ ধরতে যাবেন না

কেউই নিখুঁত নয়। কেউ বেশি লম্বা কেউ খাটো, কেউ অতিরিক্ত মোটা কেউ আবার খুব চিকন, কারো নাক বড় তো কারো ছোট, কেউ বাচাল কেউ আবার মিতভাষী।  কারো মেজাজ গরম কারো ঠাণ্ডা, কেউ খুব কালো বর্ণের তো কেউ ফর্সা বর্ণের, কেউ বেশি খায় কেউ কম, এভাবে আরো অনেক বলা যায় ।

বেশিরভাগ মানুষের মাঝেই এরকম কোনো না কোনো দোষত্রুটি আছে। প্রত্যেকেই চায়- তার সঙ্গী হবে একেবারে নিখুঁত। এমন আশা করা আসলে অবান্তর।

হে বোন! । তোমার মনে রাখতে হবে যে- অন্য পুরুষদের মধ্যে অন্যান্য ত্রুটি থাকতে পারে, যা তোমার স্বামীর মাঝে নেই। তার যেসব যোগ্যতা আছে তার উপর সন্তুষ্ট থাকো।

 

তাছাড়া তুমি নিজে যেখানে নিখুঁত নও সেখানে কেন একজন নিখুঁত স্বামী পাওয়ার স্বপ্ন দেখো । তুমি যদি নিজেকে নিখুঁত মনে করে গর্বিত হও তবে অন্যকে জিজ্ঞাসা করো। তোমার মাঝেও দুর্বলতা আছে ।  তুচ্ছ জিনিসকে কেন তুমি অতিরঞ্জিত করবে? সামান্য কিছুর জন্য কেন তুমি তোমার জীবন ধ্বংস করবে? বুদ্ধিমান হও। অসার, মূর্খ হয়ো না। তোমার স্বামীর দোষত্রুটি এড়িয়ে চলার চেষ্টা করো। আর কখনোও তার সামনে বা অগোচরে এসব নিয়ে আলোচনা করো না। পরিবারে আন্তরিক একটি পরিবেশ তৈরি করার চেষ্টা করো এবং এর মাধ্যমে আল্লাহর নেয়ামত উপভোগ করো।

যাই হোক- হয়ত তোমার স্বামীর চরিত্রে এমন কিছু দোষ থাকতে পারে, যা তুমি সংশোধন করে দিতে পারো । যদি তা হয় তবে ধৈর্যধারণ করে ও সতর্ক আচরণের মাধ্যমে তুমি সফল হতে পারবে।

তার সমালোচনা করা ও তার সাথে ঝগড়া করা তোমার জন্যে উচিত নয়। বরং তোমার উচিত হলো- তাকে বন্ধুসূলভ আচরণের মাধ্যমে বুঝিয়ে বলা।

স্বামীকে নিয়েই সুখে থাকুন

নিজের স্বামী ছাড়া দ্বিতীয় কোনো পুরুষকে ভেবো না । স্বামীকে নিয়েই সুখে থাকো। তুমি যদি তা না করো তবে নিজেই নিজেকে চাপে ফেলে দিবে। যেহেতু তুমি তোমার স্বামীর সাথে সংসার করতে রাজি হয়েছো, তাহলে কেন এখন অন্য পুরুষের দিকে মনোযোগ দিবে? কেন তাকে অন্য ছেলেদের সাথে তুলনা করবে? নিজেকে কষ্ট দেওয়া এবং নিজের মানসিক যন্ত্রণা বাড়ানো ছাড়া অন্য পুরুষদের দিকে তাকিয়ে তুমি কী আর অর্জন করতে পারবে?

হে বোন! কখনো অন্য পুরুষের প্রশংসা করো না। নিজের স্বামী ছাড়া অন্যলোককে নিয়ে ভেবো না। মনে মনে এমন আফসোস করো না, ‘হায়, আমার যদি অমুকের সাথে বিয়ে হতো! আমার স্বামী যদি অমুকের মতো সুদর্শন হতো! হায়, আমার স্বামী যদি এমন ভালো একটা চাকুরী করতো! হায় এটা, হায় ওটা!

কেন নিজ হাতে নিজের বৈবাহিক জীবনের ভিত দুর্বল করে দিচ্ছো? ধরো, এসব আকাঙ্ক্ষার কোনোটা সফল হয়ে গেলো; এবার তুমি কি নিশ্চিত যে- এটা আসলেই তোমাকে সুখ এনে দেবে? তোমার কী ধারণা, যেসব পুরুষকে দেখে মনে হয় তাদের সব আছে । কোনো অভাব নেই, তাদের সবার স্ত্রী তাদেরকে নিয়ে খুউব সুখী?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *