black caraway seeds benefits অর্থাৎ কালোজিরার উপকারিতা

black caraway seeds benefits

black caraway seeds benefits জানতে পড়ুন

বাংলা নাম: কালিজিরা ,  ফার্সী নাম: শোনিজ, আরবি নাম: হাব্বাতুস সওদা

ইংরেজি নাম: black cumin     বৈজ্ঞানিক নাম: Nigella sativa

“নাইজেলা” শব্দটি ল্যাটিন ভাষা নাইজেলাস বা নাইগার শব্দ থেকে উৎকলিত , যার অর্থ হলো “কালো” । 

ইতিহাস থেকে জানা যায়, রোমীয়রা কুলিনারী অর্থাৎ রান্নার কাজে ইহা ব্যবহার করত ।  গ্রিকরা ঔষধি ভেষজ হিসেবে ব্যবহার করত ।

পরবর্তীতে পারস্য ও ভারতে এর ব্যবহারের প্রচলন ঘটে । ভারত উপমহাদেশে রান্না-বান্নাসহ রোগ নিরাময়েও এর ব্যবহার হয়ে এসেছে।

রাসূল (সা)-এর কালিজিরা সম্পর্কিত মহামূল্যবান বাণীর প্রেক্ষিতে ইহা ভেষজ বিজ্ঞানীদের গবেষণা ও অনুসন্ধানের দ্বার উন্মুক্ত করে ।    বিগত শতাব্দীতে মিশর, অস্ট্রেলিয়া, ক্যালিফোর্নিয়া, ভারতসহ বিভিন্ন দেশেও এই ভেষজের ওপর নানাবিধ গবেষণা করা হয়।

কালিজিরার অন্যতম কার্যকরী উপাদানসমূহ হলো

কালিজিরা সম্পর্কে রাসূল (সা) বলেন-     الْحَبَّةُ السَّوْدَاءُ شِفَاءٌ مِنْ كُلِّ دَاءٍ إِلَّا السَّامَ

আবু সালামা (রা) আবু হুরায়রা (রা) থেকে বর্ণনা করেন। রাসূল (সা) ইরশাদ করেছেন, “তোমরা কালিজিরা ব্যবহার করবে। কেননা, কালিজিরা প্রত্যেক রোগের ঔষধ মৃত্যু ছাড়া।”

(সহীহ বুখারী, হা/৫৬৮৮ ও সহীহ মুসলিম হা/৫৮৯৬)

black caraway seeds benefits কালোজিরার উপকারিতা

 (খাওয়াসুল আদভিয়া হতে বর্ণিত)

২. যৌন ব্যাধি: স্নায়ুবিক দুর্বলতায় উপকারী।

৩. সর্দি, কাশি, বুকের ব্যথা, পাকস্থলীতে বায়ু সঞ্চয়, ঊর্ধ্বমুখী বায়ুতে উপকারী।

৪. প্রসূতী রোগে উপকারী।

৫. Acne vulgaris তথা ভ্রণের জন্য উপকারী

black caraway seeds benefits

৬. শ্লেষ্মা বা বলগমী রোগির জন্য খুবই উপকারী।

৭. মূত্রথলীতে পাথর থাকলে মধুর সাথে কালিজিরা খেলে খুবই ভালো ফল পাওয়া যায়।

৮. সুদরে হায়েজ বা অধিক ঋতুস্রাবের জন্য অত্যন্ত উপকারী।

৯. মাত্রাতিরিক্ত প্রস্রাব প্রতিরোধক।

১০. ইহা কৃমি নাশক।

১১. মায়ের দুগ্ধ আনয়ন করে। (কিতাবুল মুফরাদাতি খাওয়াসুল আদভিয়া)

আরো অনেক black caraway seeds benefits অর্থাৎ কালোজিরার উপকারিতা রয়েছে

কালিজিরা বীজ তেলের রাসায়নিক বিশ্লেষণ

কালিজিরার তেলে নানাবিধ মূল্যবান কার্যকরী উপাদান সনাক্ত করা হয়েছে। নিম্নে চার্টের সাহায্যে তা পেশ করা হলো-

Essential Oil’s composition-কালিজিরা তেলে এদের শতকরা হার।

১ নং চার্ট

অত্যাবশ্যকীয় তেলের উপাদানসমূহ

কার্বন: ২১.১%  কালিজিরা তেলের মধ্যে ১০০ মাইক্রোগ্রামে ফ্যাটি এসিডের মধ্যে নিম্নোক্ত অনুপাতে উল্লিখিত উপাদানগুলো বিদ্যমান

১. আলফা পাইনিন: ৭.৪%

২. সাবিনিন: ৫.৫%

৩. বেটা পাইনিন: ৭.৭%

৪. অন্যান্য: ১১.৫%

২নং চার্ট

পুষ্টিকর খাদ্য উপাদান কালিজিরা তেলে এদের শতকরা হার

১. প্রোটিন/আমিষ ২১.১%

২. কার্বোহাইড্রেট/শর্করা ৩৫%

৩. ফ্যাট / চর্বি ৩৫-৩৮%

৩নং চার্ট  নিউট্রিশনাল ভ্যালু পমিাণ

 

১. প্রোটিন             ২০৮      মাইক্রোগ্রাম/গ্রাম

২. থায়ামিন            ২৫         “

৩. রিবোফ্লাভিন        ১          “

৪. পাইরিডক্সিন        ৫         “

৫. নায়াসিন            ৫৭         “

৬. ফ্লোসাসিন         ৬১০       “

৭. ক্যালসিয়াম         ১.৮৫      “

৮. আয়রন               ১০৫       “

৯. কপার                   ১৮        “

১০. জিংক                 ৬০       “

১১. ফসফরাস            ৫.২৬৫  “

(বি: দ্র: উপরিউক্ত উপাদানগুলো প্রতি গ্রামে উপরিউক্ত পরিমাণে বিদ্যমান।

কালিজিরার ব্যবহার ও গুণাগুণ

১. নার্ভাস টেনশনে এক কাপ চায়ের সাথে এক চা চামচ কালিজিরা তেল সেবনে স্নায়ুবিক শক্তি বৃদ্ধিতে সহায়তা করবে।

২. কফ এবং এ্যাজমা কালিজিরা তেল বুকে পিঠে মাখলে এবং প্রত্যহ সকাল দুপুর সন্ধ্যায় এক চা চামচ তেল সেবনে কফ ও এ্যাজমাতে বিশেষ কার্যকরী।  সঙ্গে এক চা চামচ কালিজিরার তেল মিশ্রিত করে পান করলে বিশেষ উপকারি পাওয়া যায়।

৪. হৃদরোগ ও ব্লাড ভেসেল স্টেনোসিস কালিজিরা রসুন জোশান্দা আকারে বা চায়ের মতো নিয়মিত খেলে হৃদরোগের ঝুঁকি অনেকাংশে

৫. এছাড়া ইহা ডায়াবেটিস, মেনিনজাইটিস, যৌন-অক্ষমতাসহ বিভিন্ন রোগে কার্যকর।

তবে রোগ বিশেষ ইহার ব্যবহার বিভিন্নমুখি হয়ে  থাকে

ক. গবেষকরা দেখেছেন যে, এই তেলের এমন কিছু কার্যকরী উপাদান রয়েছে যা কান্সার কোষ তৈরির কার্যকরী টক্সিন উপাদানের বিরুদ্ধে ক্রিয়াশীল এবং রক্তের টক্সিসিটির বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলে।

খ. সাউথ ক্যারোলিনার একদল গবেষক তাদের ল্যাবটরিতে গবেষণা করে প্রমাণ করেছেন যে, এর কার্যকরী উপাদান থাইমোকুইনোলাইন এবং ডাই থাই-মোকুইনোন। উভয়ই টিউমার কোষের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলে।

গ. কালিজিরাতে বেশ কিছু পুষ্টিকর কার্যকরী উপাদান রয়েছে, যা লিম্ফসাইট কোষ তৈরিতে সক্রিয় ভূমিকা রাখে এবং এন্টি-বডি তৈরিতে বিশেষভাবে ক্রিয়াশীল।

ক্যান্সার প্রতিরোধে কালিজিরা

আমেরিকার বিখ্যাত প্রফেসর ডঃ মোকামাল বলেছেন, ক্যান্সার সৃষ্টির অন্যতম কারণ হলো ফ্রি-রেডিক্যাল বা মুক্তমূলক। কালিজিরা তেলের essential oil তথা অত্যবশ্যকীয় তেল ঐসব মুক্তমূলক বা ফ্রি- রেডিক্যালগুলোর চতুর্দিকে একটি Bond তথা বন্ধন তৈরি করে, এতে ক্ষতিকর প্রভাব থেকে শরীরকে ক্যান্সার মুক্ত করে। পরবর্তীতে একে মল- মূত্র ঘাম ইত্যাদির মাধ্যমে শরীর থেকে বের করে দেয়।

  • চিকিৎসা বিজ্ঞানীদের মধ্য হতে অনেকেই বলেন, যখন কোনো লোককে পাগলা কুকুরে কামড় দেয়, তখন হতে পরবর্তী ১০/১২ দিন যদি সে লোক দুই বেলা করে পৌনে এক তোলা Error! পরিমাণ কাল জিরা গরম পানির সাথে সেবন করে তবে তার জলাতংক রোগ হবে না। কোনো লোকের শরীরে যদি পানি আসে, তখন যদি সে প্রতিদিন দুই বেলা করে ৭ দিন নিয়মিতভাবে আধা তোলা Error! করে কলিজিরা চিবায়ে খায় তবে তার  শরীরের পানি কমে যাবে। (মুরাককাবাতে মুফরাদা, পৃষ্ঠা- ২৬৬) 
  • চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা আরও বলেন, গর্ভবতী মেয়েরা বাচ্চা প্রসবের পর যদি কালিজিরা চিবায়ে বা পিষে খায় তবে তার পেশাবের বেগ বাড়বে এবং এতে তার গর্ভথলী দ্রুত পরিষ্কার হবে এবং এই পেশাবের সাথে দেহের নানা দূষিত পদার্থ বের হয়ে আসবে এবং এতে সে দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠবে। 
  • চিকিৎসা বিজ্ঞানীদের অনেকেই আরও বলেন, প্রতিদিন নিয়মিতভাবে কালিজিরা সেবন করলে মাথার সর্বময় রোগের জন্য বিশেষ উপকার সাধন করে এবং এতে পেশাবের বেগ বৃদ্ধি পায়, ফলে কিডনী রোগ হওয়ার   সম্ভাবনা কমে আসে।

সর্বরোগের ঔষধ

অথচ- মহানবী মুহাম্মদ (সা) উক্ত চিকিৎসা বিজ্ঞানীদের বহু পূর্বেই কালিজিরা

যে সর্বরোগের ঔষধ একথা তিনি তার হাদীসে বলে গেছেন। যেমন:অর্থ: ইবনে শিহাব বলেন আমাকে সংবাদ দিয়েছে আবূ সালমা ও সাঈদ বিন মুসাইয়িব, নিশ্চয় আবু হুরায়রা উভয়কে সংবাদ দেয়, নিশ্চয় তিনি রাসূল (সা)-কে বলতে শুনেছেন, মহানবী (সা) বলেছেন, কালিজিরার মধ্যে ‘সাম’ ব্যতীত সকল রোগের চিকিৎসার উপকরণ রয়েছে। তখন ইবনে শিহাব (রা) বলেন, ‘সাম’ হচ্ছে মৃত্যু। অর্থাৎ মহানবী (সা) বলেছেন, কালিজিরার মধ্যে মৃত্যু ব্যতীত সকল রোগের চিকিৎসা রয়েছে।

(বুখারী, হা/৫৬৮৮ ২য় খণ্ড, ৮৪৯ পৃষ্ঠা, কিতাবুত তির।)

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *