cow milk : দুধের উপকারিতার বাপারে কুরআন করীমে আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেছেন,
অর্থ: “জান্নাতে দুধের এমন নহর প্রবাহিত হবে যার স্বাদ কখনো পরিবর্তন হবে না।” (সূরা মুহাম্মদ: আয়াত-১৫) অন্যত্র ইরশাদ হয়েছে-
অর্থ: স্বচ্ছ নির্মল নির্ভেজাল ও খাঁটি দুধ, পানকারীদের জন্য সুস্বাদু ও উপাদেয়।” (সূরা নাহল: আয়াত-৬৬)
হাদীসে নববীতে দুধ সুহাইব (রা) হতে বর্ণিত, রাসূল (সা) ইরশাদ করেন । “তোমরা অবশ্যই গাভীর দুধ পান করবে। কেননা, এর মধ্যে শেফা রয়েছে এবং ঘি-এর মধ্যে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা রয়েছে। আর গোশতের মধ্যে রোগ রয়েছে। (যাদুল মাআদ খণ্ড-২)
অন্যত্র বর্ণিত হয়েছে। রাসূল (সা) ইরশাদ করেছেন । “আল্লাহ তায়ালা পৃথিবীতে এমন কোনো রোগ-ব্যাধি পাঠাননি যার ঔষধ প্রেরণ করেননি। আর গাভীর দুধের মধ্যে প্রতিষেধক রয়েছে। (মুসদাতরাক, অধ্যায়-তিব্ব)
শেফার কারণ বর্ণনা করা হলো – فَإِنَّهَا تَقُوْمُ مِنْ كُلِّ شَجَرٍ অর্থাৎ “গাভী সব ধরনের গাছের পাতা খেয়ে থাকে।” (মুসতাদরাকে হাকেম) আবু নঈম (রা), ইবনে আব্বাস (রা) থেকে বর্ণনা করেন, “পানীয় বস্তুসমূহের মধ্যে রাসূল (সা)-এর নিকট দুধ প্রিয় ছিল।”
দুধের উপকারিতা
দুধ ও মধু হাজারো ফুল ও ফুলের নির্যাস-এর মাধ্যমে তৈরি। বিশ্বের সমস্ত চিকিৎসাবিজ্ঞানী একত্রিত হয়েও উক্ত নির্যাস তৈরি করতে পারবে না।
একমাত্র আল্লাহ তায়ালাই স্বীয় হেকমত ও কর্ম কৌশলের মাধ্যমে নিজ বান্দার জন্য এ রকম উৎকৃষ্ট পানীয় সৃষ্টি করেছেন।
দুধের উপকারিতা সম্পর্কে বর্ণিত হয়েছে, দুধ কামভাব বৃর্ণ শুষ্কতা বিচ্যুরিত করে এবং শীঘ্রই পরিপাক হয়ে খাদ্যের স্থলাভি৭ি৩ ২মে পাস। দুধ বীর্য উৎপাদন করে। মুখের লাবণ্যতা বৃদ্ধি করে, দুষিত পদার্থ বের করে দেয় এবং স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করে।
মায়ের দুধের পুষ্টিগুণ
শিশুর সর্বোত্তম খাদ্য হলো মায়ের দুধ । শিশু জন্মানোর ৪/৫ ঘণ্টা পর থেকেই বুকের দুধ দেয়া প্রয়োজন । শাল দুধের উপকারিতাও অনেক বেশি।
মায়ের দুধ শিশুকে যথাযথভাবে বেড়ে উঠতে, মস্তিষ্কের গঠনে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সৃষ্টি করতে বিশেষ ভূমিকা রয়েছে । শিশুর ডায়রিয়া, নিউমোনিয়াসহ শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণ, কান ও মূত্রনালীর সংক্রমণ প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
মাতৃদুগ্ধের ফলে শিশুর গ্রোথ হরমোন (Growth Hormone) নিঃসৃত হয়, যা শিশুর শারীরিক বৃদ্ধিতে সহায়তা করে এবং মুখমণ্ডলের সঠিক রূপদানে সহায়তা করে।
সবচেয়ে বড় বিষয় হলো, মা ও শিশুর মধ্যে প্রগাঢ় নিবিড় সম্পর্ক গড়ে তুলতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে । শিশুর জন্মের প্রথম পাঁচ মাস শুধুমাত্র বুকের দুধ খাওয়ানোর ফলে পরিবেশ ঘটিত অসুস্থতা, অপুষ্টি, খাদ্য সংবেদনশীলতা ও এলার্জীর সম্ভাবনা কমে যা । মায়ের বুকের দুধ শুধুমাত্র শিশু নয়, মায়ের জন্য উপকারী।
মাতৃদুগ্ধদান হচ্ছে গর্ভাবস্থা ও সন্তানের প্রসবোত্তর মৌলিক অত্যাবশ্যকীয় শরীর বৃত্তিয় ধারাবাহিকতা । ফলে শিশু জন্মের পরই মায়ের দুধ খাওয়ানো শুরু করলে প্রসব পরবর্তী অত্যধিক রক্তপাত ও রক্ত স্বল্পতার ঝুঁকি কমে যায় । এছাড়া গর্ভফুলটি তাড়াতাড়ি পড়ে যায় ও প্রসবের পর বেশি রক্তক্ষরণ হয় না।
মাতৃদুগ্ধ পান করানোর ফলে মাকে স্লীম রাখতে সহায়তা করে এবং মায়ের রোগ প্রতিরোধে ক্ষমতা বাড়ার । সাথে সাথে পুনরায় গর্ভাবস্থার সম্ভাবনা বিলম্বিত করে।
বিশেষত: শিশু যদি একটানা দুই মাস বুকের দুধ পান করে তবে এ ক্ষেত্রে গর্ভধারণের সম্ভাবনা শতকরা ৯৮ ভাগ কমে যায় । এবং মায়ের শরীরের ইনসুলিনের চাহিদা কমিয়ে দেয়। এমনকি মায়ের ডিম্বাশয়ে ক্যান্সারেরসম্ভাবনা অনেকাংশে কমিয়ে দেয়।
শিশু জন্মের প্রথম পাঁচ মাস শুধুমাত্র মায়ের দুধ শিশুর বিভিন্ন প্রকার পুষ্টির চাহিদা মেটাতে সক্ষম । ফলে দুই বছর পর্যন্ত মায়ের দুধ শিশুর পুষ্টি ও মানসিক স্বাস্থ্য বিকাশে ভূমিকা পালন করে । মায়ের দুধে ফ্যাটি এসিড রয়েছে যা শিশুর বুদ্ধিদীপ্ততা ও চোখের তীক্ষ্ণতা বা জ্যোতি বাড়ায়।
দুধের পুষ্টিগুণ
১০০ গ্রাম দুধে নিম্নোক্ত খাদ্য উপাদান বিদ্যমান।
মায়ের বুকের দুধে আছে-
১. প্রোটিন: ১.০ গ্রাম
২. স্নেহ পদার্থ: ১.৯ গ্রাম
৩. শর্করা: ৭.০ গ্রাম
৪. ক্যালসিয়াম: ১.৩২ মি. গ্রাম
৫. লৌহ ০.২ মি. গ্রাম
৬. ক্যালরী: ৬৭
একমাত্র মায়ের দুধেই Docosa Hexaenoic Acid বা D.H.A নামক এক ধরনের Long Chain Fatty Acid বিদ্যমান। বিস্ময়ের বিষয় হলো অন্য কোনো দুধে (গরু, ছাগল, ভেড়া, মহিষ, পাউডার দুধে) এই D.H.A থাকে না। আর এ কারণেই চতুষ্পদী স্তন্যপায়ী প্রাণী বিবেক বুদ্ধিহীন। মায়ের বুকের দুধে D.H.A থাকে বলেই মানুষ এত বুদ্ধিমান।
মাতৃদুগ্ধ প্রয়োজনীয় যে, মাতৃহারা কোনো শিশুকে দুধ দেয়ার অধিকারী অন্য মাতাকে দেয়া হয়েছে। শিশুরা মাতৃ-দুগ্ধ পানের পরে পাকস্থলীতে এসিডের সাথে বিক্রিয়ায় দইয়ে পরিণত হয়। পাকস্থলীর এনজানি দইকে পরিপাক করে সরল খাদ্যে পরিণত করে এবং ডিওডেনামের ভিলাই দ্বারা তা শোষিত হয়।
অবশেষে মলমূত্র বের করতে পারবে না। কিন্তু শিশুরা দুধ খেয়ে মলমূত্র ত্যাগ করতে পারে। শিশুর জন্য এ দুধের প্রয়োজনীয়তা নিঃসন্দেহে বৈজ্ঞানিকভাবে স্বীকৃত। যা কুরআন অনেক আগেই আমাদের জানিয়ে দিয়েছে।
“অনেক খাবারেই গরুর দুধ জনপ্রিয়। তবে কিছু লোক ল্যাকটোজ অসহিষ্ণু।”
cow milk অর্থাৎ গাভীর দুধের পুষ্টিমান
১০০ গ্রাম cow milk অর্থাৎ গাভীর দুধে নিম্নোক্ত খাদ্য বিদ্যমান।
১. প্রোটিন: ৩.৩ গ্রাম
২. স্নেহপদার্থ: ৩.৬ গ্রাম
৩. শর্করা: ৪.৮ গ্রাম।
৪. ক্যালসিয়াম: ০.১২ মি. গ্রাম
৫. লৌহ: ২.০ মি. গ্রাম
৬. ক্যালরী: ৭১
ছাগলের দুধের পুষ্টিগুণ
১০০ গ্রাম ছাগলের দুধে নিম্নোক্ত উপাদান বিদ্যমান।
১. প্রোটিন: ৩.৭ গ্রাম।
২. স্নেহ পদার্থ: ৫.৬ গ্রাম
৩. শর্করা: ৪.৭ গ্রাম।
৪. ক্যালসিয়াম: ০.১৭ মি. গ্রাম
৫. লৌহ ০.৩ মি. গ্রাম
৬. ক্যালরী: ৮৪ গ্রাম এছাড়া দুধে শ্বেতসার থাকে। দুধের শ্বেতসারকে ল্যাকটোজ বলা হয়।
৩. মায়ের দুধ MOTHER’S MILK
ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে
ক্যান্সার রিসার্চ ইউকে-এর এক গবেষণায় দেখা গেছে স্তন্যদান উল্লেখযোগ্য হারে স্তনের ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে পারে। ত্রিশটি দেশে ৪৭টি গবেষণা কর্মের ওপর ভিত্তি করে প্রায় এক লাখ পঞ্চাশ হাজার স্বেচ্ছাসেবীর ওপর পরিচালিত গবেষণায় দেখা যায়, উন্নত দেশসমূহে অল্প সন্তান এবং স্বল্প সময় স্তন্যদান মহিলাদের অধিক হারে স্তন ক্যান্সারে আক্রান্তের জন্য দায়ী।
যুক্তরাজ্যে স্তন ক্যান্সারে আক্রান্তের সংখ্যা খুবই বেশি। সেখানে প্রতি বছর প্রায় ৩৯ হাজার নতুন রোগী শনাক্ত হচ্ছে যার প্রায় এক তৃতীয়াংশ (১২,৭০০) মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ।
একই গবেষণায় দেখা যায়, প্রতি সন্তান ধারণের জন্য ৭.০% (সাত শতাংশ) হারে এবং প্রতি এক বছর স্তন্যদানের জন্য আরও ৪.৩% হারে স্তনের ক্যান্সারের ঝুঁকি কমে। বর্তমানে যুক্তরাজ্যে ৬৯% মা স্তন্যদান শুরু করলেও মাত্র চার মাস পরে অর্ধেকেরও বেশি মা স্তন্যদান বন্ধ করে দেন। অথচ মায়েরা অন্তত ছয় মাস স্তন্যদান করলে স্তন ক্যান্সারে আক্রান্তের সংখ্যা প্রতি বৎসর এক হাজার কমে যেতে পারে।
যুক্তরাজ্যে সত্তর বৎসর বয়সে স্তন ক্যান্সারে আক্রান্তের হার ৬.৩% হলেও উন্নয়নশীল দেশসমূহে এই হার মাত্র ২.৭%। অধিক সন্তান ও দীর্ঘমেয়াদে স্তন্যদানের কারণ উন্নয়নশীল দেশসমূহে স্তন ক্যান্সারে আক্রান্তের হার কম বলে গবেষকগণ মনে করেন।
স্তনের ক্যান্সারের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে
ক্যান্সার রিসার্চ ইউকে-এর প্রধান নির্বাহী স্যার পল নার্স বলেন, আমরা যত কারণ আবিষ্কার করেছি তার প্রতিটিই এই ধারণাকে আরও মজবুত করে যে, হরমোন এবং সন্তান জন্মদানের মতো বিষয়সমূহ অবশ্যই স্তনের ক্যান্সারের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। (সূত্র: ব্রিটিশ মেডিক্যাল
জার্নাল, বিএমজে, ২০০২: ৩২৫: ১৮৪ (২৭ জুলাই) এছাড়াও সুবিখ্যাত শিশু চিকিৎসা বিজ্ঞানী ডাঃ আমানউল্লাহ বলেন, শিশু জন্মগ্রহণের পর প্রথম দু বৎসর মায়ের দুধ তার জন্য অপরিহার্য এবং খুবই উপকারী। কারণ এই দু বৎসরের মধ্যে শিশুদের মস্তিষ্কের উন্নতি সাধিত হয়। তাই এই সময়ে উক্ত শিশুর জন্য মায়ের দুধের কোনো বিকল্প কিছু নেই
অথচ মহানবী মুহাম্মদ (সা) উক্ত বিজ্ঞানীদের বহুপূর্বেই পবিত্র কুরআনের আলোকে প্রত্যেক নবজাতক শিশুকে কমপক্ষে দু বৎসর তার মায়ের দুধ খাওয়ার নির্দেশ দিয়ে গেছেন। যেমন- আল কুরআনে বলা হয়েছে-وَالْوَالِدَاتُ يُرْضِعْنَ أَوْلَادَهُنَّ حَوْلَيْنِ كَامِلَيْنِ لِمَنْ أَرَادَ أَنْ يُتِمَّ الرَّضَاعَةَ
অর্থ: আর সন্তানবতী নারীরা তাদের সন্তানদেরকে পূর্ণ দু বৎসর দুধ খাওয়াবে, যদি দুধ খাওয়াবার পূর্ণ মেয়াদ সমাপ্ত করতে চায়। (সূরা বাকারা: আয়াত-২৩৩)
অতএব প্রতীয়মান হয় যে, বর্তমান যুগের বিজ্ঞানীরা নবজাতক শিশুদের দুধ খাওয়ানোর ব্যাপারে যা বলছেন, তা মহানবী (সা) তাদের বহুপূর্বেই বলে গেছেন।
শিশুদের জন্যে মায়ের দুধ উত্তম খাদ্য
মায়ের বুকের দুধ পান করলে শিশু মানসিক এবং শারীরিক দিক হতে শক্তিশালী হয়ে ওঠে। বারোটি উন্নয়নশীল দেশে শিশু মৃত্যুর হার রোধ করার উদ্দেশে ইউনিসেফ একটি কর্মসূচি গ্রহণ করে। এ কর্মসূচির নামকরণ করা হয় ‘মায়ের দুধই সেরা’।
এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, মায়ের দুধ না পাওয়ার কারণে প্রতি বছর ১০ লাখ শিশুর মৃত্যু ঘটে। এ কর্মসূচি যেসব দেশে বাস্তবায়ন করা হয়েছিলো সেগুলো হচ্ছে, পাকিস্তান, বিলোটিয়া, ব্রাজিল, মিসর, ঘানা, আইভরি কোস্ট, কেনিয়া, মেস্কিকো, নাইজেরিয়া, ফিলিপাইন, থাইল্যান্ড এবং তুরস্ক। এ পরিকল্পনার উদ্দেশ্য হচ্ছে শিশুদের দুধ খাওয়ানোর বিজ্ঞানসম্মত সুযোগ বৃদ্ধি করা।
জাতিসংঘের সাহায্যপুষ্ট এ সংস্থার বক্তব্য হচ্ছে, বহু হাসপাতালে মায়ের দুধ না পাওয়ার কারণে শিশুদের প্রাথমিক পর্যায়ে দুধ সরবরাহ করা কষ্টকর হয়ে পড়ে। বৈজ্ঞানিক গবেষণার উদ্ধৃতি দিয়ে ইউনিসেফ জানিয়েছে, মায়ের বুকের দুধ যেসব শিশু পান করে তাদের বোতলের দুধ পান করা শিশুদের চেয়ে শতকরা দশ ভাগ কম হাসপাতালে নিতে হয়। একথা একশভাগ প্রমাণিত হয়েছে যে, যেসব শিশু মায়ের বুকের দুধ পান করে তারা মানসিক দিক হতে সুস্থ থাকে। কারণ মায়ের দুধ
স্বাভাবিকভাবে শিশুদের পুষ্টি ও শক্তি যোগাতে সাহায্য করে। ইউনিসেফ নারী সংগঠনগুলোর কাছে অনুরোধ জানিয়েছে তারা যেন ব্যাপকভাবে প্রচারণা চালায় যে, মায়ের দুধ পান করা শিশুর স্বাভাবিক অধিকার।
যেসব শিশু মায়ের বুকের দুধ পান করে তারা অধিক মেধাবী হয়ে গড়ে ওঠে। তারা নানা প্রকার রোগ হতে মুক্ত থাকে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যেসব শিশু মায়ের বুকের দুধ পান করেনি তারা স্কুলের ক্লাসে প্রায়ই চুপচাপ থাকে। তাদের বন্ধুর সংখ্যাও কম।
গবেষণা অনুযায়ী মস্তিষ্ক রোগ সিজোফ্রেনিয়ার শিকার ৭০ ভাগ শিশুর আইকিউ রেকর্ড করা হয়েছে ১১০ এবং গাভীর দুধপানকারী শিশুদের আইকিউ রেকর্ড করা হয়েছে ১০০। একজন বৃটিশ বিশেষজ্ঞের হিসাব অনুযায়ী মায়ের দুধের মধ্যে এমন কিছু অংশ থাকে, যা শিশুর মানসিক শক্তি বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। অথচ গাভীর দুধে এরকম শক্তি থাকে না। (রিসার্চ রিপোর্ট)
স্তনে গুটি দেখা দিলে
যেসব মা শিশুকে দুধ পান করায় তাদের স্তন ক্যান্সার কম হয় বর্তমানে দেখা যায়, কোনো মহিলার স্তনে গুটি দেখা দিলে সে মহিলা আশংকা করে তার স্তনে ক্যান্সার হয়েছে। এমতাবস্থায় এটা ধারণা করা ভুল যে, তার আয়ু শেষ হয়ে এসেছে এবং চিকিৎসা অর্থহীন।
কেউ কেউ স্তনের গুটি দেখানোর জন্যে ডাক্তারের কাছে যেতে বিলম্ব করে। অথচ এটা হওয়ার পর তিন মাসের মধ্যে যদি কোনো চিকিৎসকের শরণাপন্ন না হয় তবে বিষয়টি জটিল হয়ে যায়। তার ক্যান্সার হওয়ার আশঙ্কা প্রবল হয়।
স্তনে গুটি দেখা দিলে অস্থির হওয়ার কোনো কারণ নেই। তবে ডাক্তারের সঙ্গে অবশ্যই পরামর্শ করতে হবে। গুটি ছোট থাকার সময়ে চিকিৎসায় ভালো হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। বেশি বয়সে এ ধরনের সমস্যা দেখা দিলে এর সাথে অন্য সমস্যা যুক্ত হয়ে মৃত্যু ত্বরান্বিত হতে পারে। স্তন ক্যান্সার শুনতে যতোটা গুরুতর মনে হয় বাস্তবে কিন্তু ততোটা গুরুতর নয়।
বৃটেনের চর্মরোগ বিশেষজ্ঞের চিকিৎসায় এ রোগে আক্রান্ত রোগীদের সম্পূর্ণ নিরাময় সম্ভব হয়েছে। বলাবাহুল্য, মহিলাদের যেসব গুটি দেখা
দেয় তার ১০টির মধ্যে একটি ক্যান্সার বাকি ৯টি সাধারণ গুটি বা ফুসকুড়ি। যাদের স্তনে ক্যান্সার হয় তাদের অধিকাংশেরই স্তন কেটে ফেলার প্রয়োজন হয় না। যেসব মহিলার তাড়াতাড়ি চিকিৎসার ব্যবস্থা করা যায় তাদের শতকরা ৮৫ ভাগ স্তন ক্যান্সার হওয়ার পরও ৫ বছর বা তার চেয়ে বেশি সময় পর্যন্ত বেঁচে থাকে। এ সময়ে তারা থাকে সম্পূর্ণ সুস্থ করতে পারে। তবে রোগীর আত্মবিশ্বাসও এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তাকে চিন্তা করতে হবে, আমার কিছু হবে না, আমি পরাজিত হবো না। বর্তমানে স্তন ক্যান্সারে আক্রান্তদের জন্যে বিশেষ চিকিৎসা কেন্দ্র স্থাপন করা হচ্ছে।
যেসব মহিলা সন্তানদের বুকের দুধ খাওয়ায় তাদের স্তন ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না। স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত মহিলাদের অধিকাংশ সুস্থ হওয়ার পর বার্ধক্যজনিত রোগে মৃত্যুবরণ করে। ডাক্তার এস এ-এর রিপোর্টে একথা উল্লেখ করা হয়েছে।
Leave a Reply