২য় বার গর্ভবতী হওয়ার লক্ষণ – আগের চেয়ে আলাদা? অনেক মায়েরাই প্রথম সন্তান নেওয়ার পর দ্বিতীয়বার গর্ভধারণের সময় শরীরের কিছু ভিন্ন প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করেন। যদিও কিছু লক্ষণ প্রথমবারের মতোই থাকে, তবুও ২য় বার গর্ভবতী হওয়ার লক্ষণ কিছুটা ভিন্ন হতে পারে। তাই যারা দ্বিতীয়বার মা হতে যাচ্ছেন, তাদের জন্য এই পরিবর্তনগুলো জানা গুরুত্বপূর্ণ।
পেটে বাচ্চা আসার প্রাথমিক লক্ষণ কী কী?
প্রথমেই জানা দরকার পেটে বাচ্চা আসার প্রাথমিক লক্ষণ কী কী?
সাধারণত গর্ভধারণের প্রথম দিকেই যে লক্ষণগুলো দেখা দিতে পারে সেগুলো হলো:
-
মাসিক বন্ধ হয়ে যাওয়া
-
বমিভাব বা বমি
-
স্তনে ব্যথা ও ফুলে যাওয়া
-
অতিরিক্ত ঘুম ঘুম ভাব
-
হালকা তলপেটে ব্যথা
-
খাবারের প্রতি অরুচি বা আকর্ষণ
এই লক্ষণগুলো ২য় বার গর্ভবতী হওয়ার লক্ষণ হিসেবেও সাধারণভাবে দেখা যায়, তবে কিছু ক্ষেত্রে এগুলো আরও তীব্র হতে পারে।
সাদা স্রাব কি গর্ভধারণের লক্ষণ হতে পারে?
হ্যাঁ, অনেক সময় সাদা স্রাব গর্ভধারণের একটি সম্ভাব্য লক্ষণ হতে পারে। ডিম্বস্ফোটনের পর থেকে শরীরে হরমোনের তারতম্যের কারণে অনেক নারীর শরীর থেকে সাদা, পাতলা ও গন্ধহীন স্রাব নিঃসরণ হতে পারে। তবে এটি নিশ্চিত লক্ষণ না হলেও ২য় বার গর্ভবতী হওয়ার লক্ষণ হিসেবে বিবেচনায় রাখা যায়।
মাসিক মিস হওয়ার কত দিন পর গর্ভাবস্থা বোঝা যায়?
সাধারণত, মাসিক মিস হওয়ার ৫-৭ দিন পর গর্ভধারণ টেস্ট করলে নির্ভরযোগ্য ফল পাওয়া যায়। অনেক সময় ২য় বার গর্ভবতী হওয়ার লক্ষণ আগেই দেখা দিলেও নিশ্চিত হতে প্যাথলজিক্যাল টেস্ট বা হোম প্রেগন্যান্সি টেস্ট করা দরকার।
গর্ভবতী হওয়ার প্রথম সপ্তাহের লক্ষণগুলো কী কী?
১ম সপ্তাহে গর্ভধারণের লক্ষণ খুবই হালকা হতে পারে। যেমন:
-
হালকা ব্যথা
-
ক্লান্তি
-
ঘন ঘন প্রস্রাব
-
অতিরিক্ত ঘুম
এই সময় অনেকেই বুঝতেই পারেন না যে তারা গর্ভবতী হয়েছেন।
গর্ভবতী হওয়ার দ্বিতীয় সপ্তাহের লক্ষণ
২য় সপ্তাহে হরমোনের পরিবর্তনের কারণে দেখা দিতে পারে:
-
স্তনে টান অনুভব
-
মেজাজ পরিবর্তন
-
হালকা পেটের অস্বস্তি
গর্ভবতী হওয়ার তৃতীয় সপ্তাহের লক্ষণ
এই সময়ে ডিম্বাণু নিষিক্ত হয়ে জরায়ুতে স্থাপিত হয়। লক্ষণগুলো হতে পারে:
-
সাদা স্রাবের পরিমাণ বৃদ্ধি
-
হালকা রক্তপাত (ইমপ্ল্যান্টেশন ব্লিডিং)
-
হালকা মাথা ঘোরা
গর্ভবতী হওয়ার চতুর্থ সপ্তাহের লক্ষণ
চতুর্থ সপ্তাহে গর্ভাবস্থা প্রায় নিশ্চিতভাবে বোঝা যায়। লক্ষণগুলো হলো:
-
মাসিক বন্ধ
-
গা গুলানো
-
স্তনে ব্যথা
-
রুচির পরিবর্তন
২ মাসের গর্ভবতী বাচ্চার নড়াচড়া
২ মাসে সাধারণত শিশুর নড়াচড়া মা সরাসরি অনুভব করেন না। তবে আল্ট্রাসাউন্ডে শিশুর হৃদস্পন্দন ও নড়াচড়া ধরা পড়ে।
৩ মাসের গর্ভবতী বাচ্চার নড়াচড়া
এই সময় শিশুর হাত-পা গঠন সম্পন্ন হয় এবং হালকা নড়াচড়া শুরু হয়। কেউ কেউ হালকা স্পন্দন অনুভব করতে পারেন।
৭ মাসের গর্ভবতী বাচ্চার নড়াচড়া
৭ মাসে শিশুর নড়াচড়া সবচেয়ে বেশি থাকে। বাচ্চা কিক করে, গড়াগড়ি দেয়, এমনকি মাঝে মাঝে ব্যথাও অনুভব হয়। ২য় বার গর্ভবতী হওয়ার লক্ষণ হিসেবে অনেক মা এই সময় বেশি নড়াচড়া অনুভব করেন, কারণ তাদের অভিজ্ঞতা থাকে আগেরবারের চেয়ে বেশি।
উপসংহার
অনেকাংশে প্রথমবারের মতো হলেও কিছু ক্ষেত্রে ভিন্ন হতে পারে। আগের অভিজ্ঞতা থাকায় অনেক মা এবার দ্রুত লক্ষণ বুঝতে পারেন। তবে যেকোনো সন্দেহ হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি। আপনার শরীরের প্রতিটি পরিবর্তনকে গুরুত্ব দিন এবং সঠিক সময়ে যত্ন নিন।